শিশুর যত্নে কোনও আপোস নয়

এখন বেশ শীত! এ নিম্ন তাপমাত্রায় রোগাক্রান্ত হয় বৃদ্ধ ও শিশুরা। আবহাওয়ার দ্রুত তারতম্যের সঙ্গে শিশুরা নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক সময়ই পারে না। তারা খুব স্পর্শকাতর। তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকাল শিশুদের জন্য বেশি কষ্টকর ও অসহনীয় হয়ে ওঠে। এ সময় জ্বর, পেট খারাপ বা ডায়রিয়া, সর্দি, কাশিসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যাসহ নিউমোনিয়ায় পর্যন্ত ভুগতে দেখা …

এখন বেশ শীত! এ নিম্ন তাপমাত্রায় রোগাক্রান্ত হয় বৃদ্ধ ও শিশুরা। আবহাওয়ার দ্রুত তারতম্যের সঙ্গে শিশুরা নিজেকে মানিয়ে নিতে অনেক সময়ই পারে না। তারা খুব স্পর্শকাতর। তাই অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকাল শিশুদের জন্য বেশি কষ্টকর ও অসহনীয় হয়ে ওঠে। এ সময় জ্বর, পেট খারাপ বা ডায়রিয়া, সর্দি, কাশিসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যাসহ নিউমোনিয়ায় পর্যন্ত ভুগতে দেখা দেয়। এ ছাড়া শীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নানা ভাইরাল জ্বরও বেশি হয়। তাই শীতকালে শিশুদের একটু বাড়তি যত্ন (Comfort) প্রয়োজন।

NewBorn Baby

* নবজাতক শিশুর যত্ন

শীতকালে নবজাতকের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন। কারণ নবজাতকের তাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা খুবই কম, তাই অল্প শীতেই তারা কাবু হয়ে যায়। যে বাচ্চা পূর্ণ ৩৭ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে কাটিয়ে জন্ম নিয়েছে তার ক্ষেত্রে জটিলতা কম। কিন্তু সময়ের আগেই জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। জন্মের আগে নবজাতক শিশু মায়ের পেটে উষ্ণ তাপমাত্রায় অবস্থান করে। এছাড়া শিশুর শরীরে তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি হতেও সময় লাগে। তাই ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুকে উষ্ণ তাপমাত্রায় (Warmth) রাখতে হবে। যদি ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সুতির কাপড় পরিয়ে কাঁথা দিয়ে মুড়ে (Illness) রাখুন। এ মাত্রার নিচে হলে সোয়েটার ব্যবহার করতে পারেন।

  • বাচ্চাকে দোলনায় বা আলাদা মশারির নিচে না রেখে মায়ের কোলঘেঁষে শোয়াবেন। এতে বাচ্চা উষ্ণ থাকবে, মায়ের সঙ্গে আন্তরিকতা বাড়বে ও বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হবে। বাচ্চাকে ঘনঘন বুকের দুধ খাওয়ান। দুধ খেতে হালকা ব্যায়াম হয় বলে শরীর নিজ থেকেই উত্তাপ তৈরি করে। এ ছাড়া বুকের দুধে রোগ প্রতিরোধ শক্তি থাকে। ফলে শিশু সহজে ঠান্ডা, কাশি ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয় না।
  • এ সময় বাইরের ঠান্ডা বাতাস থেকে বাঁচতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রেখে উষ্ণতা নিশ্চিত করতে পারেন। তবে ঘরে কয়লা ও তুষের আগুন রাখবেন না। এতে শিশুর ক্ষতি হয়।
  • শিশুকে শীতকালে ঘরের বাইরে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। রোদে দিতে হলে জানালার পাশে বা ঘরের বারান্দা থেকে গায়ে রোদ লাগান।
  • ঘরের মধ্যে কাপড় না শুকিয়ে ছাদে বা বারান্দায় শুকান।
  • যদি পরিবারের কোনো সদস্যের বা কোনো আত্মীয়ের সর্দি, কাশি, ভাইরাল জ্বর ইত্যাদি থাকে, তবে শিশু ও মাকে তাদের থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • সপ্তাহে দু-তিন দিন ঈষদুষ্ণ জল (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দিয়ে স্নান করান। স্নানের আগে ঘরের দরজা-জানালা লাগিয়ে নিন। স্নানের পর শিশুর গায়ে বেবি অয়েল বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন।
  • মনে রাখবেন, নবজাতক শিশুর সামান্য কাশি বা হাঁচিও কিন্তু সন্দেহজনক। তাই কাশি, শব্দ করে শ্বাস টানা, দুধ টেনে খেতে না পারা, শ্বাস নিতে কষ্ট বা পাঁজর নিশ্বাসের সঙ্গে দেবে যেতে থাকলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
  • শিশুকে রাতের বেলা ডায়াপার পরিয়ে শোয়ান। ডায়াপার ছয় ঘণ্টার বেশি কোনোভাবেই রাখা যাবে না। ডায়াপার থেকে র‌্যাশ হতে পারে, তাই আগে থেকে ভেসলিন বা জিঙ্কসমৃদ্ধ ক্রিম লাগিয়ে দিন।
  • শীতে নবজাতককে অবশ্যই হাতমোজা, পা-মোজা ও কানটুপি পরাতে হবে। উল বা পশমে অ্যালার্জি হলে এগুলো পরিহার করে ভারী সুতির জামা পরান। সন্ধ্যার পর বাইরে না বের হলেই ভালো।
6 Months Oldie

* দেড় মাস থেকে এক বছর বয়সি শিশুর যত্ন

  • শিশুকে প্রয়োজন অনুযায়ী উষ্ণ(Heating) রাখুন। ঠান্ডা পরিবেশে রাখতে হবে। তাই বলে, স্যাঁতসেঁতে ঘরেও তাকে রাখা ঠিক হবে না।
  • বাচ্চাকে বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে।
  • ছয় মাসের বেশি হলে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার দিন। খিচুড়িতে ডিমের সাদা অংশ, লালশাক, পালংশাক অল্প করে দিতে পারেন। লেবুর রস দেবেন, কমলার রস খাওয়াবেন। এতে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়বে। ঠান্ডা খাবার পরিহার করুন।
  • যেসব বাচ্চা হামাগুড়ি দেয়, দেখবেন তারা যেন ঠান্ডা মেঝেতে হামাগুড়ি না দেয়। তবে কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ কার্পেটের রোয়া থেকে বা ধুলো থেকে অ্যালার্জি হয়। তাই মাদুর বা ম্যাট ব্যবহার করা ভালো।
  • একদিন পর পর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে স্নান করান। স্নানের পর বেবি লোশন (Moisturizer) লাগাবেন। তেলজাতীয় কিছু লাগাবেন না।
  • বাচ্চাকে নরম কাপড়ের জুতা পরানোর অভ্যাস করুন ও শোয়ানোর সময় মোজা পরিয়ে নিন।
  • মনে রাখবেন, এ বয়সি বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই সর্দি, কাশি সহজেই লেগে যায়। বাচ্চাকে খুব জনবহুল স্থানে (মেলা, পিকনিক) না নিয়ে যাওয়াই ভালো।
Kids are playing...

* এক থেকে ছয় বছরের বয়সের শিশুর যত্ন

  • এ বয়সে শিশুরা (Kids) অনেক খেলাধুলা ও দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। তাই (so) খুব বেশি গরম ও ভারী কাপড় পরার প্রয়োজন হয় না। তবে সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ও বিকেলে খেলতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত উষ্ণতা নিশ্চিত করুন।
  • বাচ্চাকে স্কুলে পাঠালে পরস্পরের মাধ্যমে শীতকালে কিছু সংক্রমণ রোগ ও ছোঁয়াচে চর্মরোগ বিস্তার লাভ করে। তাই শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি খেয়াল রাখুন। নিয়মিত লোশন লাগান যেন ত্বক শুষ্ক হয়ে না যায়।
  • বাসি, বাজারের খোলা খাবার ও ঠান্ডা খাবার পরিহার করে গরম ও ঘরে তৈরি করা খাবার দিন এবং তাজা শাকসবজি, ফলমূল খাওয়ান।
adlinkdigital.kol@gmail.com

adlinkdigital.kol@gmail.com

Keep in touch with our news & offers

Subscribe to Our Newsletter

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *