ঝটিকা সফরে মানালি…

ভারতের উত্তরের হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলার বিয়াস নদীর উপত্যকায় অবস্থিত একটি অপূর্ব পাহাড়ি শহরের নাম মানালি। পৌরাণিক দেবতা মনুর নামানুসারে মানালির নামকরণ করা হয়েছে। প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। এর অপূর্ব পর্বতশৃঙ্গ, তুষারময় উপত্যকা এবং শান্ত নদী মানালিকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। মাত্র তিনদিনেও আপনি ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। ভ্রমণের …

ভারতের উত্তরের হিমাচল প্রদেশের কুলু জেলার বিয়াস নদীর উপত্যকায় অবস্থিত একটি অপূর্ব পাহাড়ি শহরের নাম মানালি। পৌরাণিক দেবতা মনুর নামানুসারে মানালির নামকরণ করা হয়েছে। প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। এর অপূর্ব পর্বতশৃঙ্গ, তুষারময় উপত্যকা এবং শান্ত নদী মানালিকে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত করেছে। মাত্র তিনদিনেও আপনি ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে।

ভ্রমণের সেরা সময়ঃ

মানালি ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।

কীভাবে পৌঁছাবেন?

কলকাতা থেকে কালকা নেতাজী এক্সপ্রেস (১২৩১১) ধরে শিমলা হয়ে মানালি যাওয়া যায়। দিল্লি বা চণ্ডীগড় থেকে মানালি যাওয়ার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া নিকটতম রেলস্টেশন হলো জোগিন্দরনগর, সেখান থেকে গাড়ি বা ট্যাক্সি নিয়ে মানালি পৌঁছানো যায়। বিমানপথে আসতে চাইলে ভুন্টার এয়ারপোর্ট, যা মানালি থেকে প্রায় ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত, সেটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

কোথায় থাকবেন?

মানালিতে থাকার জন্য বিভিন্ন প্রকার হোটেল, রিসর্ট এবং হোমস্টে পাওয়া যায়। আপনার বাজেট এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত বাসস্থান বেছে নিতে পারবেন। বেশিরভাগ হোটেল ও রিসর্ট শহরের কেন্দ্রস্থলে বা প্রকৃতির কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে থেকে দারুণ ভিউ উপভোগ করা যায়।

পর্যটন স্থানঃ

১. হিড়িম্বা দেবী মন্দির- হিড়িম্বা দেবী মন্দির বা ধুঙ্গারি মন্দির ১৫৫৩ সালে নির্মিত। প্রাচীন এই মন্দিরটি কাঠের তৈরি এবং স্থানীয়দের কাছে পবিত্র। এটি একটি প্রাচীন গুহা মন্দির, যা মহাভারতে উল্লেখিত ভীমের স্ত্রী হিড়িম্বি দেবীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। মন্দিরটি হিমালয়ের পাদদেশে ধুঙ্গিরি ভ্যান বিহার নামে একটি দেবদারু বন দ্বারা বেষ্টিত। শীতকালে এখানে পুরো বরফ জমে থাকে। মন্দিরে যেহেতু খালি পায়ে প্রবেশ করতে হবে, তাই মোজা পড়ে গেলে ভাল।

২. সোলাং ভ্যালি- মানালি থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে বিয়াস নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। সোলাং ভ্যালি হিমাচল প্রদেশে দুঃসাহসিক কার্যকলাপের জন্য উপযুক্ত স্থান হিসাবে বিখ্যাত। যারা অ্যাড্রেনালিনের রাশ ভালোবাসেন তাদের জন্য প্যারাশুটিং, প্যারাগ্লাইডিং, স্কেটিং এবং জোর্বিং-এ রাইড করার জন্য সোলাং-এর চেয়ে ভাল আর কোনও জায়গা নেই। সোলাং শুধু দুঃসাহসিক কার্যকলাপের জন্যই নয়, এর সবুজ আপেল বাগান, তুষারাবৃত চূড়া এবং হ্রদ প্রতি বছর ভারত এবং বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শককে আকর্ষিত করে।

৩. রোহতাং পাস- মানালি থেকে প্রায় ৫১ কিমি দূরে অবস্থিত রোহতাং পাস, তুষারাচ্ছন্ন পর্বতমালা দেখার জন্য সেরা স্থান। এটি হিমালয় অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর পাসগুলির মধ্যে একটি। এটি তার বিস্ময়কর সৌন্দর্য এবং রোমাঞ্চকর সড়ক ভ্রমণের জন্য বিখ্যাত। রোহতাং পাস লাহৌল, স্পিতি এবং লাদাখ অঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত। পর্যটকরা সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ দেখতে এবং গ্রীষ্মকালেও তুষারপাতের অভিজ্ঞতা পেতে এই পাসে যান। ‘জাব উই মেট’ থেকে ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ পর্যন্ত অনেক ব্লকবাস্টারের শুটিং হয়েছে এখানে।

৪. বিয়াস নদী- বিয়াস নদী মানালির একটি জীবনরেখা, কুল্লু উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। নদীটি হিমালয় দ্বারা বেষ্টিত এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য একটি হটস্পট হিসাবে কাজ করে। বিয়াস নদী মানালিকে রূপোর নেকলেসের মতো সাজিয়েছে, যা এর মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যে সৌন্দর্য যোগ করেছে। এটি হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়, পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যায় এবং পাকিস্তানে প্রবেশের আগে সুতলেজ নদীকে আলিঙ্গন করে। আপনি এর তীরে রাফটিং, ক্যাম্পিং, ট্রেকিং, পিকনিক করতে পারেন।

কী খাবেন?

মানালির বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে স্থানীয় খাবারের পাশাপাশি ভারতীয়, চাইনিজ, এবং পশ্চিমী খাবার পাওয়া যায়। তিব্বতী মোমো, থুকপা এবং স্থানীয় রাজমা-চাওয়াল এখানে জনপ্রিয়।

কেনাকাটাঃ

মানালি মল রোডে শীতবস্ত্র, হস্তশিল্প এবং স্থানীয় সুভেনির কেনার ভালো সুযোগ রয়েছে।

মানালি ভ্রমণে প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং অ্যাডভেঞ্চারের রোমাঞ্চ আপনাকে মুগ্ধ করবে।

adlinkdigital.kol@gmail.com

adlinkdigital.kol@gmail.com

Keep in touch with our news & offers

Subscribe to Our Newsletter

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *